ন্যাটোর মাধ্যমে তাদের ভাষায় নিরাপত্তা আর স্বাধীনতা উন্নত করার নিমিত্তে তাদের সীমান্তের ওপারে সন্ত্রাস আর ব্যাপক ধ্বংসাত্মক অস্ত্র বিনাশ করার অর্থ হচ্ছে—গোটা মুসলিম উম্মাহ, তাদের শক্তিশালী রাষ্ট্র, ব্যক্তিত্ব এবং সমুদয় দীনদার ব্যক্তির ওপর প্রকাশ্যে আক্রমণ চালিয়ে তাদের বিনাশ সাধন করা। এই শিকারের সূচনা কেমন হবে এবং তার চূড়ান্তরূপই-বা কীভাবে সম্মুখে উপস্থিত হবে? বাস্তব সত্য হচ্ছে, সমগ্র সন্ত্রাসী দেশের অবস্থা শুরুতে তা-ই হবে, যে অবস্থা হচ্ছে বর্তমান ইরাকের। আর সন্ত্রাসী সমাজের অবস্থা তা-ই হবে, যে অবস্থা হয়েছে মিসরে ইখওয়ানের। আর সকল সন্ত্রাসী ব্যক্তিত্বের অবস্থা তা-ই হবে, যে অবস্থা হচ্ছে বিন লাদেনের মতো মহান ব্যক্তিত্বের। এমনকি প্রতিটি মুসলিম ব্যক্তি, যে ইসলামের কোনো বিধি অনুযায়ী আমল করে, তাকেই সন্ত্রাসী আখ্যায়িত করা হবে এবং ইসলামের প্রতিটি আমল—তা সালাত, সাওম-জাকাত আর হজ যাই হোক-না কেন, তা সন্ত্রাসী কার্য বলে চিহ্নিত হবে। এই অজুহাতে মসজিদ-মাদ্রাসা বন্ধ করা হবে। নামাজ-রোজার ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হবে। হজ নিষিদ্ধ করা হবে। কথা এখানেই শেষ নয়; গোপনে এবং ব্যক্তিগতভাবে এসব ইবাদাত করাও সন্ত্রাস বলে আখ্যায়িত করা হবে। যে শয়তানি শক্তি গোটা দুনিয়াকে হাতের তালুতে এক নজরে দেখছে, তার গোয়েন্দাবাহিনীর লোকজন প্রতিটি কর্মকাণ্ডের চুলচেরা খবর দেবে—কোথায় কোন গুহায় আর কোন মাঠে আল্লাহর কোন বান্দা নামাজ আদায় করছে। এক দিকে সে নামাজের নিয়ত করছে আর অন্যদিকে দুনিয়ার অপর প্রান্ত থেকে বা তার আশাপাশ থেকেই ক্ষেপণাস্ত্র এসে তার গায়ে পড়বে; মারা যাবে বহু লোক। এ অবস্থায় লোকেরা ইসলামের এক একটা আমল ত্যাগ করা শুরু করবে। এমনকি নামাজও অস্বীকার করে বসবে। সম্ভবত এ অবস্থা সম্পর্কেই বলা হয়েছে—
‘সেসব ফিতনার মোকাবিলার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নাও, যা হবে আঁধার রাত্রের টুকরো-সাদৃশ। তখন কোনো ব্যক্তি সকালে মুমিন আর বিকালে কাফির আবার বিকালে মুমিন এবং সকালে কাফির হয়ে পড়বে। আর সে তার দীনকে দুনিয়ার সাধারণ পণ্যের বিনিময়ে বিক্রি করে দেবে।’ [সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১১৮; সহিহ ইবনি হিব্বান, হাদিস : ৬৭০৪।]
এমন অবস্থায় কোনো আল্লাহর বান্দা যদি আল্লাহর ইবাদাতকে প্রাধান্য দেয়, তবে সে যেন নিজের মৃত্যুকেই ডেকে আনবে। এমন অবস্থায় ইবাদাত করা হবে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি হিজরত করার সমান। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন—
‘প্রকাশ্য মৃত্যু আর গোলযোগকালে ইবাদাত যেন আমার পানে হিজরত।’ [সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৯৪৮; সহিহ ইবনি হিব্বান, হাদিস : ৫৯৫৭।]
Reviews
There are no reviews yet.