মালামিহু ফিত তাজউইদ


পাবলিকেশন: ইনবাত পাবলিকেশন
পৃষ্ঠা: 228
কভার: পেপারব্যাক

Original price was: ৳ 350.Current price is: ৳ 245.

উসমান (রা)—এর মুসহাফের শুদ্ধতা বিচার করতে গিয়ে অনেকে উবাই ইবনে কা’ব (রা)—এর মুসহাফের দুটি অতিরিক্ত সুরার কথা উল্লেখ করেন যা বর্তমান কুরআনে নেই! সূরা দুটির নাম হচ্ছে, সুরা হাফদ এবং সুরা খুল’।
যেমনটি ইমাম সুয়ুতী (রহ) বলেন,
وَفِي مُصْحَفِ أُبَيٍّ سِتَّ عَشْرَةَ لِأَنَّهُ كَتَبَ فِي آخِرِهِ سُورَتَيِ الْحَفْدِ وَالْخُلْعِ
এবং উবাইয়ের মুসহাফে (একশত এবং) ষোলটি সুরা ছিল। এর শেষে তিনি দুটি সূরা লিখেছেন, হাফদ ও খুল’।
হাফেয সুয়ুতী উবাই ইবনে কা’ব (রা)—এর মুসহাফের অতিরিক্ত সূরা দুটি এনেছেন—
সুরা হাফদ— اللَّهُمَّ إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَلَكَ نُصَلِّي وَنَسْجُدُ وَإِلَيْكَ نَسْعَى وَنَحْفِدُ نَرْجُو رَحْمَتَكَ وَنَخْشَى عَذَابَكَ إِنَّ عَذَابَكَ بِالْكُفَّارِ مُلْحَقٌ
সুরা খুল’—اللَّهُمَّ إِنَّا نَسْتَعِينُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُثْنِي عَلَيْكَ وَلَا نُكْفُرُكَ وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَفْجُرُكَ
অন্যান্য বর্ণনায় ভিন্ন কিছু শব্দও এসেছে। ওরিয়েন্টালিস্টরা দাবি করে যে, কুরআনের এই দুটি অতিরিক্ত সূরা সাহাবীরাও সলাতের মাঝে তিলাওয়াত করতেন। অবশ্য তাদের দাবি পুরোপুরি ভুল নয়। উমার, উবাই, আবু মুসা আল আশআরী (রা) সহ প্রমুখ সাহাবী সলাতে এটি পড়তেন বলে জানা যায়। হুসাইন বিন আব্দুর রহমান থেকে বর্ণিত, একদিন তিনি উসমান বিন যাইদ এর পিছনে সলাত আদায় করেন। সলাত শেষে উসমান বিন যাইদ তাঁকে বলেন যে, তিনি এই শব্দগুলো দ্বারা দুয়া করেছেন। এরপর তিনি বলেন—
كَذَا كَانَ يَصْنَعُ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ، وَعُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ
উমার বিন খত্তাব এবং উসমান ইবনে আফফান (রা) ও এভাবেই করত।
কাজেই বোঝা যাচ্ছে, উসমান (রা) ও সলাতে এই উবাই ইবনে কা’ব (রা)-এর মুসহাফে উল্লেখি দুটি বাক্য সলাতে পড়তেন। তাহলে কেন উসমান (রা) এ দুটি সুরা বাদেই কুরআন লিপিবদ্ধ করলেন?
মূল বিষয় হচ্ছে, উবাই ইবনে কা’ব (রা)—এর মুসহাফে উল্লেখিত সূরা দুটি আসলে দুআয় কুনুত যা বিতরের শেষ রাকাতে পড়া হয়। আর এ কারণেই বিভিন্ন বর্ণনায় এসেছে যে, একাধিক সাহাবী এটি সলাতে তিলাওয়াত করেছেন।
মুসহাফ বলতে আজ আমরা যেমন বুঝি সাহাবাদের যুগে তেমন ছিল না। তাঁরা একে সর্বোচ্চ নোটবুক হিসেবে গ্রহণ করেছিলো এবং তা ব্যাক্তিগতভাবে ব্যবহার করতো। এ কারণেই হয়তো উবাই ইবনে কা’ব (রা) উক্ত দুআয় কুনুত তাঁর মুসহাফের একদম শেষে লিখে রেখেছিলো, কেবলমাত্র নোট আকারে টুকে রাখার উদ্দেশ্যে। অথবা এও হতে পারে যে, দুআয় কুনুতকে কুরআনের অন্তর্ভুক্ত মনে করা উবাই ইবনে কা’ব (রা)—এর একটি ভুল ধারণা মাত্র, যা মানবীয় বৈশিষ্ট এবং এরকম ভুল হয়ে যাওয়া অতি সাধারণ। যদি আসলেই এগুলো কুরআনের অন্তর্ভুক্ত হতো তাহলে অবশ্যই ১১৬ টি সুরার ব্যাপারে আরও অনেক সাহাবাদের বিভিন্ন বর্ণনা পাওয়া যেত। অথচ লক্ষাধিক সাহাবীর মাঝে উবাই ইবনে কা’ব (রা) ব্যতীত আর কেউই কুরআনে ১১৬ টি সুরা হওয়ার বিষয়ে দাবি করেননি। এমনকি এ বিষয়েও কোনো বর্ণনাও পাওয়া যায় না যে, ১১৪ টি সূরার ব্যাপারে উবাই ইবনে কা’ব (রা) সরাসরি বিরোধিতা করেছেন। কাজেই উসমান (রা)—এর এই পদক্ষেপ যথাযথ এবং আল্লাহর ইচ্ছায় তা নির্ভুল।

Reviews

There are no reviews yet.

Only logged in customers who have purchased this product may leave a review.